সৌন্দর্য্যের পূর্ন প্রকাশ ঘটাতে হলে একটি সঠিক সামঞ্জস্যের প্রয়োজন। এই সামঞ্জস্যের প্রথম পর্ব হচ্ছে সামঞ্জস্যপূর্ন শরিরীক গড়ন, এর পর একে একে আসে যেসব পর্বের কথা সেগুলো হলো-ত্বকের উজ্জ্বলতা,নিখুত মেকআপ,মানানসই হেয়ার স্টাইল এবং সঠিক রঙের রুচিশীল সাজ পোশাক ও অলংকার। এসবকিছুই যেমন প্রত্যেক নারীকে সুন্দরী হতে সাহায্য করে,তেমনি শুধুমাএ এ সবকিছুর মাধ্যমেই যে সৌন্দর্য সম্পূর্ন করে ফুটিয়ে তোলা যাবে তা নয়। বরং সৌন্দর্য পরিপূর্নতা লাভ করে তখনই যখন এসবের সাথে যুক্ত হয় আত্নবিশ্বাস,মার্জিত আচার আচরণ সুন্দর ব্যবহার চলাফেরা ও বসার সঠিক ভঙ্গি,কথা বলার নম্র ধরণ,রুচিশীল আদব-কায়দা ও আকর্ষনীয় ব্যক্তিত্ব।
আত্নবিশ্বাস: প্রতিনিয়ত আমরা কঠিন বাস্তবের মুখোমুখি হয়ে থাকি। যে সমাজে আমরা বড় হয়েছি,চলাফেরা এ কার্যকর্ম করছি সে সমাজে এখন অনেক কথা বলা হলেও এখনো সে সমাজ বেশ রক্ষণশীল। বিশেষ করে মেয়েদের আরো বেশি বিধি-নিষেধ মেনে চলতে হয়। বর্তমান আধুনিক সময়ে যদিও পড়াশোনার ক্ষেতে ছেলে ও মেয়েদের মধ্যে খুব একটা প্রভেদ নেই তারপরও মেয়েদের ক্ষেতে সমাজের যে নির্দিষ্ট বিধি-নিষেধ আছে,তাকে অতিক্রম করা সম্ভব কেবলমাত্র আত্নবিশ্বাসের মাধ্যমে দৃঢ় আত্নবিশ্বাসই নিজেকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার এক মাত্র আয় সে নারী হোক বা পুরুষ হোক না কেন। আর নারীর বেলায় বলবো,নারী যেন শুধু নারী নয় একজন ব্যক্তি মানুষ হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন এবং প্রতিষ্ঠিত করতে পারে সেই দিকে বিশেষ যত্নবান হতে হবে
আচার ব্যবহার: আপনার আচার-ব্যবহারের ওপর নির্ভর করছে আপনার সঙ্গ অন্যের কাছে কতটা আকর্ষনীয় ও আদারনীয় আর এই জ্ঞান আপনি অর্জন করতে পারবেন আপনার পরিবার থেকে। সুতরাং আপনার পরিবারকে হতে হবে এ ব্যাপারে সচেষ্ট। আপনার প্রতি পরিবারের এবং পরিবারের প্রতি আপনার এই দায়িত্ব রয়েছে সমানভাবে। এক্ষেত্রে আপনাকে করতে হবে স্বাভাবিক আত্নমর্যাদাটুকু বজায় রেখে একজনের পক্ষে যতটা বিনয়ী ও নম্র হওয়া সম্ভব সেটুকু স্বভাব অর্জন করা।
ব্যক্তিত্ব: সুন্দর হবার প্রথম শর্ত সুন্দর ও মার্জিত ব্যক্তিত্ব। এবার আসা যাক চলন বলন ও আচার আচরনের প্রসঙ্গে। আপনি ভাবছেন একজন শিক্ষিত মানুষকে নিশ্চই তার চলন আচার আচরণ সম্পর্কে জ্ঞান দানের প্রয়োজন পড়ে না। কিন্তু আমরা অনেকেই জ্ঞান থাকা সত্তেও সেই জ্ঞানের প্রয়োগটা যথাসময়ে যথাভাবে করে উঠতে পারিনা বা করিনা। এটার মূল কারণ নিজের ও পারিপার্শ্বিক অবস্থার সঙ্গে সঙ্গতির অভাব নিজের সচেতনতার অভাব। আপনি যদি নিজ সম্পর্কে সচেতন হয়ে চলেন। আপনার চারপাশে কারা আছেন এক কথায় স্থান,কাল,পাত্র বুঝে চলেন কথা বলেন বা আচর আচরন একটু সচেতন ও মার্জিতভাবে করেন তবেই আপনার মধ্যে প্রকাশ পাবে বিশেষ এক ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি মানুষ তার আচার ব্যবহার ও ব্যক্তিত্বের কারণে আলাদা বিমোচনে ভূষিত হতে পারে। এককথায় অর্থ এই নয় যে আপনি সব ক্ষেত্রেই ভাব গম্ভির হয়ে থাকবেন। স্থান কাল ও পাত্র ভেদে আপনার অভিব্যক্তি আপনি প্রকাশ করতে সচেষ্ট হবেন।
আপনার সুন্দর বাচন ভঙ্গি আপনার ভাবনা ও কথার গম্ভীরতা সহজেই পারে যে কাউকে আকৃষ্ট করতে। সব সময় মনে রাখা উচিত এই জীবন, যৌবন রঙ রূপ সবই ক্ষণস্থায়ী। মানুষ মনে রাখে মানুষের গুন মানুষ মনে রাখে মানুষের ব্যবহার তার কথা। দিন যায় কথা থাকে। রঙ রূপ দুদিন থাকে নিজেকে গড়ে তুলুন একজন গুনী মানুষরূপে একজন ভদ্র মার্জিত রুচিবান ভাল মানুষ রুপে। আপনার ভালো বা অসুন্দর রূপের ভাবনা না ভেবে নিজের ভেতরের সৌন্দর্যকে মেনে চলুন। তবেই আপনি হতে পারবেন প্রকৃত সুন্দর একজন মানুষ।
মানব চরিত্রের সবচেয়ে বড় গুন হলো ব্যক্তিত্ব। এই ব্যক্তিত্ব একজন অতি সাধারণ নর বা নারীকে অসাধারণ করে তোলার । দৈহিক সৌন্দর্য রক্ষার পাশাপাশি জীবনের প্রতিক্ষেত্রে সঠিক মতামত প্রকাশ করাও দৃঢ়ভাবে সে মত পোষন করে চলার চেষ্টা করতে হবে। এছাড়াও আরো যে বিষয়গুলো সব সময় মনে রাখা প্রয়োজন তাহলো ছোটদের সাথে আপনার ব্যবহার হবে যেমন সহজ-সরল তেমনি সমবয়স্কদের কাছে আপনা ব্যবহার হওয়া উচিত হাসি খুশি,উদার ও খোলামেলা। কিন্তু বয়স্কদের প্রতি শ্রদ্ধা,বিনয়ী ও নম্র ভাব প্রকাশ করতে হবে। আর সমতা হলেই বয়সীদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ন আচরণ আপনার ব্যক্তিত্বে ফুটিয়ে তুলবে বিশেষ গুন আপনি সবার কাছে হবেন আদরনীয়।
আপনার চরিত্রের সাথে প্রয়োজন শিষ্টাচার ও আতিথিয়তা,দাঁড়ানো,বসা বা হাঁটাচলা,হাসি ও কথা বলাতে থাকবে অনন্য বৈশিষ্ট্য প্রতিদিন স্থান কাল পাত্র ভেদে আপনাকে নির্ধারণ করতে হবে কোথায় কখন কার সাথে কিভাবে কি কথা বলতে হবে কিভাবে চলতে হবে। প্রয়োজনে অনেক কিছু মানিয়ে চলতে হবে আপনাকে। দেখবেন এগুলো আপনার ভেতরে তৈরিই ছিল।শুধু প্রকাশে কিছুটা কমতি ছিল। ক্রমাগত অনুশীলন বা চর্চার মাধ্যমে এ বিষয়গুলোই হবে আপনার চরিত্রের অনবদ্য বৈশিষ্ট্য।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top