সৌন্দর্য্য চর্চায় মেহেদীর অপরিহার্যতার অনস্বীকার্য। এমন কোন নরনারী নেই যিনি জীবনে অন্তত একবার মেহেদীতে হাত রাঙাননি। মনে পড়ে সেই ছোটবেলাকার কথা যখন শবেবরাতের রাতে মেহেদী পরার ধুম লেগে যেত। সকাল থেকেই শুরু হতো শবেবরাতের খাওয়া-দাওয়ার আনন্দ। সেই সাথে মেহেদী পাতা গাছ থেকে পেড়ে সবাই মিলে বেটে কাঠি দিয়ে ফুল, লতা-পাতায় নক্সা করে মেহেদী পরা। তারপর দেখতাম কার হাতে মেহেদী কতটা রঙিন হয়েছে, কতটা সুন্দর কারুকাজ হয়েছে কার হাত বেশী সুন্দর লাগছে এইসব। এরপর রোজার ঈদে কোরবানীর ঈদে মেহেদী লাগানতো আছেই। ছেলে বুড়ো সবার হাতেই মেহেদীর রঙ কি যে ভালো লাগতো। আর বিয়ের বর কনেকে মেহেদী পরানোর একটা আলাদা উৎসবই আছে। মেহেদীতে হাত কনেকে মেহেদী পরানোর একটা আলাদা উৎসবই আছে। মেহেদীতে হাত না রাভালে বর-বধুর বিয়ের সাজে যেন অপূর্ণতা রয়ে যায়। বাসর রাতে বর যখন নববধূর হাত ধরে তখন মেহেদীর অপরূপ কারুকাজ ও রঙ দেখে সে মোহিত না হয়ে কি পারে?
মেহেদী চুল রাঙাতে ও অন্য যেকোন হেয়ার কালারের চেয়ে ফলপ্রসূ। মেহেদী যেমন সাদা কালো সব চুলেই এনে দেয় রঙিন পরশ তেমনি চুলের পুষ্টি সাধন ও ঔজ্জল্য বাড়াতে ও মেহেদীর জুড়ি নেই।
যার চুল মেহেদীর রঙে রাঙাতে চান তাদের জন্য কয়েকটি টিপস:
১.রুক্ষ চুলে মেহেদী লাগাতে হলে প্রথমে চুলে তেল দিয়ে নেবেন। অথবা মেহেদী বাটার সাথে একটা ডিম ফেটে এবং ২ চা চামচ নারকেল তেল অথবা বাদাম তেল অথবা বাদাম তেল অথবা অলিভ অয়েল মিশিয়ে দিবেন। এগুলো আপনার চুলে কন্ডিশনিং-এর কাজ করবে।
২. চুল বেশী রঙ করতে গেলে কমপক্ষে ১ থেকে ২ ঘন্টা মেহেদী মাথায় রাখুন। যাদের  ঠান্ডা লাগার সম্ভবনা আছে তারা এগারোটা বারোটার মধ্যে মেহেদী মাথায় লাগিয়ে আধা ঘন্টা রেখে ধুয়ে ফেলুন।
৩. মেহেদীর রঙ গাঢ় করতে ২ থেকে ৪ চা চামচ চা পাতা জ্বলে দিয়ে ঘন লিকার করে মেহেদীর সাথে লাগান।
৪. ২ চা চামচ ব্ল্যাক কফি একটু গরম পানিতে বানিয়ে মেহেদীর সঙ্গে মিশিয়ে মাথায় লাগান।
৫. যাদের মাথায় খুশকী আছে তারা কাঁচা মেথী ২ চা চামচ বেটে মেহেদীর সাথে মিশিয়ে লাগান।
৬. মেহেদী রঙ যারা গাঢ় করতে চান তারা পরপর তিনদিন এই প্রক্রিয়ায় মেহেদী লাগান। তবে মনে রাখতে হবে মেহেদী লাগানোর ২৪ ঘন্টার মধ্যে চুলে শ্যাম্পু করা যাবে না। সঙ্গে সঙ্গে শ্যাম্পু করলে শ্যাম্পুতে মেহেদীর রঙ অনেকটা বেরিয়ে যায়।
৭. মেহেদীতে অনেক সময় চুল ড্রাই হয়ে যায় সেজন্য মেহেদী লাগানোর পর চুল ধুয়ে চুলে কন্ডিশনার লাগান।
৮. কন্ডিশনার অথবা শ্যাম্প হিসাবে আপনি প্রাকৃতিক নির্যাস ব্যবহার করকতে পারেন। যেমন মসুরের ডাল বাটা, রিঠা, আমলা, শিকাকাই, বাটা, আঠালো মাটিএতে কোন ক্যামিক্যাল এর পাশ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বলে এগুলো চুলের জন্য যেমন ভাল তেমনি চুলের রঙের ও কোন ক্ষতি করে না।
৯. মেহেদী দু রকমের পাওয়া যায়। যথা:
ক. বাজারের প্রক্রিয়াজাত গুড়ো মেহেদী।
খ. গাছ থেকে পাড়া কাঁচা মেহেদী। এটিও বাজারে পাওয়া যায়।
তবে প্রক্রিয়াজাত প্যাকেটকৃত মেহেদীর দাম একটু বেশী। ৩৫/৪০ টাকা প্রতি প্যাক। আর কাচা মেহেদী এটিও বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। ছোট চুলে ১০ টাকার বড় চুলে ১৫/২০ টাকার মেহেদীতেই আপনি কাজ চালাতে পারেন।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top