একদল বক প্রতিদিনই এক কৃষকের ক্ষেতে এসে ফসল খেয়ে যায়। কৃষক বক তাড়াবার জন্য অনেক চেষ্টা করে কিন্তু কিছুতেই পেরে ওঠে না। বকের দল একদিন ভয় পেয়ে পালিয়ে যায় তো পরদিনই আবার ঝাঁক বেঁধে ক্ষেতে এসে নামে। বকের উৎপাতে বেচারা কিষানের একেবারে নাজেহাল অবস্থা।
একদিন চাষীর এক বন্ধু তাকে বলল,এভাবে হবে না ভাই। কেনেস্তারা পিটিয়ে আর ঢিল ছুঁড়ে কখনও বক তাড়ানো যায় না। ক্ষেতের ধান বাঁচাতে হলে গোটা ঝাঁকটাকে ধরার ব্যবস্থা কর। বন্ধুর কথা শুনে চাষী পরদিনই ক্ষেতে ফাঁদ পেতে রাখল। আর সেইদিনই সবকটা বক ফাঁদে আটকা পড়ল।
সেই বকের ঝাঁকে সেদিন একটা সারসপাখিও ছিল। ভাগ্যদোষে সে-ও বকদের সঙ্গে বন্দি হল। ফাঁদে বকের ঝাঁক ধরাপড়েছে দেখে কৃষক তো লাঠি নিয়ে তেড়ে এলো।
সারসপাখি দেখতে বকের মতো হলেও আকারে অনেকটাই বড়। কৃষক ছুটে এসে তার উঁচিয়ে থাকা লম্বা গলাটাই সবার আগে চেপে ধরল। এতদিনের পোষা রাগে সে তখন ফুঁসছিল। বিপদ বুঝতে পেরে সারস কাতর গলায় কৃষককে বলল, ভাই আমি তোমার কোন ক্ষতি করিনি। আমায় তুমি মেরো না। বকদের সঙ্গে বেড়াতে বেরিয়েছিলাম। যদি জানতাম তোমার ক্ষেতের ধান নষ্ট করার জন্য তারা এখানে আসছে, তাহলে কখনওই আমি তাদের সঙ্গে আসতাম না।
কৃষক বলল, আমি তোমার কোন কথাই শুনব না। দুষ্ট বকগুলো আমার অনেক ক্ষতি করেছে। তাদের সঙ্গে যখন ধরা পড়েছ তখন তোমাকেও তাদের মতোই সাজা পেতে হবে। অনেকেবার বকগুলোকে তাড়াবার চেষ্টা করেও পারিনি। তাই আমি শপথ করেছি, ঝাঁকের সবকটা বককেই গলা টিপে মারব। তোমাকেও মরতে হবে।
এই বলে চাষী সবার আগে সেই নিদোর্ষ সারসকেই গলা টিপে মারল।


উপদেশ: দুর্জনের সংসর্গ ভয়াবহ ( গোবিন্দ দে )

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top